এগিয়ে বাংলা নিউজ ডেস্কঃ বাঁকুড়া শহর থেকে ৪ কিলোমিটার এগিয়ে গেলেই বিকনা গ্রাম। আর তার এক কোনায় আপনমনে দাঁড়িয়ে আছে ডোকরাপাড়া। শিল্পের পাড়া, শিল্পীদের পাড়া। যেখানে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঠুকঠুক আওয়াজে শিল্পীরা শিল্প সৃষ্টি করেই চলেছে। এই পাড়ায় পিতলের ক্যানভাসে সরস্বতী, লক্ষী,গণেশ বা দশভূজার রূপ ফুটিয়ে তুলতে ব্যাস্ত থাকেন শিল্পীরা।
একটা সময় ছিল যখন শিল্পীদের কাজের বরাত সেইভাবে ছিল না। এখন চরম ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে দিন কাটছে তাদের। তাদের তৈরি করা জিনিস রাজ্যের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও পাড়ি দিচ্ছে। মাঝখানে একটা সময়ে অভাব আর বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা না পাওয়ার কারণে ডোকরা শিল্পীদের শিল্প সৃষ্টির মনোবল ভেঙে পড়েছিল। এই শিল্পীদের শিল্পের কদর থাকলেও অভাব কখনো তাদের পিছু ছাড়তো না।
যার ফলে পরবর্তী প্রজন্ম মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছিলো তাদের পূর্বপুরুষদের দেখানো পথ থেকে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম এই পাড়াতে বাস করলেও তাদের নিজস্ব কোনো বসবাসের জমি ছিল না। কিন্তু পশ্চিমবাংলায় রাজনৈতিক পালাবদল এর সাথে সাথে ডোকরা শিল্পীরাও তাদের শিল্পসৃষ্টির মনোবল ফিরে পেলেও তা কিন্তু যথেষ্ট ছিল না। এখন সময় পাল্টেছে। বাঁকুড়া জেলা পরিষদের উদ্যোগে ৮৪ টি শিল্পীর পরিবারকে জমির পাট্টা তুলে দেওয়া হয়েছে,লক্ষাধিক টাকা ব্যয় করে এই ডোকরা পাড়াকে একটা মডেল শিল্প পাড়া বানিয়ে তোলার কাজ চলছে।
রাজ্যসহ রাজ্যের বাইরের থেকে আগত সমস্ত ক্রেতাদের জন্য তৈরি হয়েছে গেষ্ট হাউস। কোভিডের কালোছায়া থেকে আপত মুক্তির জন্য বাইরের পর্যটকদের আনাগোনাও হচ্ছে বেশ ফলে শিল্পীদের তৈরি করা জিনিস বিক্রিও ভালোই চলছে।বাঁকুড়া জেলা পরিষদ থেকে পূর্ত এবং পরিবহন কর্মদক্ষ শিবাজী ব্যানার্জি নেতৃত্বে একটি দল ডোকরা পাড়া পরিদর্শন করলেন এবং কথা বললেন শিল্পী এবং শিল্পীর পরিবারের সদস্যদের সাথে। দিলেন জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে পাশে থাকার আশ্বাস।
জেলা পরিষদের পূর্ত ও পরিবহন কর্মাধ্যক্ষ শিবাজী ব্যানার্জি জানান “আমাদের সরকার সবসময় শিল্পীদের পাশে আছে ভবিষ্যতে আরো কিছু প্রয়োজনেও আমরা আছি। এই শিল্পতালুকে আগত পর্যটকেরাও এই শিল্পকে দেখে মন্ত্র মুগ্ধ। জেলা পরিষদের এই উদ্যেগে পুরো ডোকরা শিল্প তালুক বাড়তি অক্সিজেন নিয়ে পথ চলা আবার শুরু করেছে।”